জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছে ‘পদ্মা গ্রন্থাগার’ তানভীর হাসান তানু/জেএস/জিকেএস জেলা প্রতিনিধি | ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ১১:২৯ এএম, ১২ জুন ২০২৩

জ্ঞানার্জনে বইয়ের বিকল্প নেই। মনের খোরাক মেটাতে আমরা বই পড়ি। এজন্য চাই অনেক বই, হরেক বইয়ের সমাহার। সে সঙ্গে চাই নিরিবিলি পরিবেশ। বিষয়গুলোর সম্মিলন যেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ‘পদ্মা গ্রন্থাগারটি’। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ‘পদ্মা গ্রন্থাগারে’ নিয়মিত সব বয়সীদের বই পড়া দেখে অভিভূত সবাই।

আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে গ্রন্থাগারের সংখ্যা অপ্রতুল। প্রত্যন্ত এলাকায় গ্রন্থাগার নেই বললেই চলে। পাঠ্যপুস্তকের বাইরের বই সম্পর্কে গ্রামাঞ্চলের শিশু-কিশোরদের তেমন কোনো ধারণা নেই। এ সমস্যা থেকে উত্তরণে শিশু-কিশোরদের হাতে বই তুলে দিতে সদর উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামে গড়ে উঠেছে ‘পদ্মা গ্রন্থাগার’।

জেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরের এ গ্রামটির কিশোর-কিশোরীরা সারাদিন অন্য সব খেলাধুলা বা মোবাইলে বুঁদ হয়ে থাকত, তারা এখন সুযোগ পেলেই ঢু মারে এই পাঠাগারে। শিশুদের কাছেও এ পাঠাগার অন্যতম পছন্দের জায়গা।

বর্তমানে দুই হাজারেরও বেশি বই রয়েছে পদ্মা গ্রন্থাগারটিতে। সাহিত্য, বিজ্ঞান, ইতিহাস, জীবনী, চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতিমূলক বই, ম্যাগাজিন, সংবাদপত্র, মাসিক কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, শিশুসাহিত্য প্রভৃতি বিষয়ে বইপত্র পাওয়া যায় এখানে। পাঠাগারের পশ্চিম পাশের একটি অংশজুড়ে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক নানা বই। আর এসব বই পড়ে জ্ঞান আহরণ করতে প্রতিদিনই সেখানে ছুটে আসেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বইপ্রেমী মানুষেরা।

বাসুদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র রায় বলেন, আশপাশের তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ পাঠাগারে নিয়মিত আসে।

পাঠাগারে আসা রানা, মৌসুমি, দিপক, মিম বলেন, যখন ক্লাস থাকে না তখনই চলে আসি এই পাঠাগারে। এখানে এসে গল্পের বই, স্কুলের বই-পত্রিকাসহ নানা রকম বই পড়ি। আগে অবসরে শুধু টিভি আর মোবাইলে গেমস খেলে সময় পার করতে হতো। এখন বই পড়ে অনেক আনন্দ পাই আমরা।

২০২০ সালে পদ্মা গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন এই গ্রামেরই সন্তান প্রদীপ রায়। তিনি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার রয়্যাল মেলবোর্ন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গ্রন্থাগার কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।

প্রদীপ রায় বলেন,বই পড়ি উন্নত সমাজ গড়ি এই স্লোগানকে সামনে রেখেই পদ্মা লাইব্রেরির যাত্রা শুরু। তরুণ সমাজ গ্রন্থাকারে যাবে নিজে বিকাশিত হবে ও সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, লাইব্রেরি হচ্ছে জ্ঞানের প্রদীপ। আমরা যদি এমন কোন লাইব্রেরির সন্ধান পাই তাহলে আমাদের জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে তাদের বই দিয়ে সাহায্য করি।

Read the original report

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *